মিয়ানমারে চলমান গৃহযুদ্ধের মধ্যে মাদক চোরাকারবারিরা এখন ইয়াবা তৈরির মেশিন বাংলাদেশে পাচার করছে।
দেশটির মংডু শহর থেকে বাংলাদেশে আসার সময় রোহিঙ্গারা এসব মেশিন নিয়ে আসছে বলে অভিযোগ রয়েছে। পরবর্তীতে এগুলো কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকায় স্থাপন করা হয়।
সাম্প্রতিক তদন্তে এসব তথ্য জানতে পেরেছে বলে জানিয়েছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি)।
গত ১৯ সেপ্টেম্বর টেকনাফ উপজেলা হাসপাতালের কাছ থেকে মাদক চোরাকারবারি ফিরোজ আলমকে (৪৫) গ্রেপ্তার করে টেকনাফ স্পেশাল জোনের একটি ডিএনসি দল। তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় এক কেজি ক্রিস্টাল মেথ।
ডিএনসি টেকনাফ স্পেশাল জোনের সহকারী পরিচালক সিফাত উল্লাহ তাসনিম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘উদ্ধারকৃত ক্রিস্টাল মেথের দাম প্রায় পাঁচ কোটি টাকা। যদিও চোরাকারবারি বা রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে এগুলো মাত্র ৪০ লাখ থেকে ৫০ লাখ টাকায় বিক্রি করে।’
এসব ক্রিস্টাল মেথ কোথা থেকে আসছে জানতে চাইলে সিফাত বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি যে চোরাকারবারিরা সরাসরি ক্রিস্টাল মেথ বিক্রি করছে না। কারণ, এগুলো ব্যবহার করে এখন বাংলাদেশের ভেতরেই ইয়াবা তৈরি করা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘চোরাকারবারিরা রোহিঙ্গাদের বাহক হিসেবে ব্যবহার করে কিছু ইয়াবা তৈরির মেশিন নিয়ে এসেছে এবং সেগুলো কক্সবাজারের বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকায় স্থাপন করেছে। এসব মেশিন অত্যন্ত দুর্গম এলাকায় বসানো হয়েছে। যার কারণে এগুলো খুঁজে পাওয়া বেশ কঠিন। তবে, আমরা ২৪ ঘণ্টা কাজ করছি এগুলোর সন্ধান বের করতে।’
Check This Out
বাংলাদেশের নং 1 প্লাটফর্ম
Great Winnings
এটা আপনার সীমাহীন আনন্দ এবং বিরাট জ্যাকপটের টিকিট
Great Winnings
সিফাত দাবি করেন, ‘ইয়াবা ও ক্রিস্টাল মেথের চোরাচালান আগের চেয়ে বেড়েছে। মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আসার সময় রোহিঙ্গারা তাদের সঙ্গে করে এসব মাদক নিয়ে আসছে।’
গ্রেপ্তারকৃত ফিরোজের বিষয়ে সিফাত বলেন, ‘তিনি একটি মাদক চক্রের সদস্য এবং টেকনাফে এজেন্ট হিসেবে কাজ করেন। ফিরোজের কাজ হচ্ছে মাদকের চালান গ্রহণ করা এবং তারপর নির্দেশিত জায়গায় সেটা পৌঁছে দেওয়া।’
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাদক উদ্ধারের তথ্য বিশ্লেষণ করে দ্য ডেইলি স্টার দেখতে পায়, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে কক্সবাজার জেলা থেকে প্রায় চার লাখ ১০ হাজার ইয়াবা এবং ৯৫০ গ্রাম ক্রিস্টাল মেথ উদ্ধার করা হয়েছিল। পরের মাসেই এই সংখ্যা বেড়ে যায়, পাওয়া যায় সাত লাখ ৯২ হাজার পিস ইয়াবা ও তিন কেজি ৪০৪ গ্রাম মেথ।
এপ্রিলে এই পরিমাণ হয়ে যায় প্রায় দ্বিগুণ। এ মাসে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রায় ১৫ লাখ ৫৮ হাজার ইয়াবা ও পাঁচ কেজি ১৬৯ কেজি মেথ উদ্ধার করে।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে দেশটির সেনাবাহিনী ও আরাকান আর্মির চলমান সংঘর্ষের মধ্যে গত কয়েকদিন ধরেই শত শত রোহিঙ্গা শরণার্থী নাফ নদী দিয়ে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে।
রোহিঙ্গা নেতাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ৫ আগস্টের পর নতুন করে অন্তত ৩০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।
যদিও গত ৩ সেপ্টেম্বর পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেছেন, সম্প্রতি প্রায় আট হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।
কক্সবাজারের বিস্তীর্ণ এলাকায় নির্মিত ক্যাম্পে প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা বসবাস করছে। তাদের অধিকাংশই ২০১৭ সালে মিয়ানমারের সামরিক অভিযানের সময় পালিয়ে বাংলাদেশ আশ্রয় নেয়।.সুত্র ডেইলি স্টার
পাঠকের মতামত